অল্প পুঁজিতে মাশরুম চাষ
অল্প পুঁজিতে বিজ্ঞানভিত্তিক ভাবে 'গরিবের মাংস' নামে পরিচিত মাশরুম চাষ করে গ্রামের ছেলেমেয়েরা চটজলদি স্বনির্ভর হতে পারেন। মাশরুমে রয়েছে নানা খনিজ উপাদান, ভিটামিন বি কমপ্লেক্স ও ১৮ রকমের অ্যামাইনো অ্যাসিড। সহজপাচ্য খাবার বলে শিশু, গর্ভবতী মহিলা, বয়স্ক মানুষ, হার্ট ও ডায়াবেটিস রোগী, কোষ্ঠকাঠিন্য, গ্যাসের সমস্যা, হাইপারটেনশন ও রক্তাল্পতা রোগীদের জন্য উপকারি খাদ্য।
মাশরুম চাষ কেন লাভজনক:
(১) খুব কম খরচে মাশরুম চাষ করা যায়।
(২) চাষের কাজে ব্যবহার করা বর্জ্য পদার্থ যেমন, খড়, গাছের শুকনো পাতা, ধানের কুঁড়ো/ভূষ, প্রভৃতি, যা গ্রামীণ এলাকায় প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। হিসাব করে দেখা গেছে, আমাদের দেশে ৪20 মিলিয়ন টন কৃষিজ বর্জ্য পড়ে নষ্ট হয়। যা ব্যবহার করে ৩১০ মিলিয়ন টন মাশরুম চাষ করা যেতে পারে। যা থেকে ১০ মিলিয়ন টন প্রোটিন আমরা পেতে পারি যা ভারতের মতো দেশে অপুষ্টির অভাব পুরণে অনেকটাই সাহায্য করতে পারে।
(৩) সরকারি, বেসরকারি সংস্থা ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা গ্রামের ছেলে-মেয়েদের স্বনির্ভরতার জন্য নিখরচায় মাশু রুম চাষের ট্রেনিং ও ব্যবসার জন্য আর্থিক সাহায্য দেয়। (৪) স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মেয়েরা বাজারে ঝিনুক মাশরুম ৮০ থেকে ১০০ টাকা ও খড়ের মাশরুম ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে পারেন।
(৫) মাশরুম চাষের জন্য খুব কম জায়গার দরকর হয় যা বাড়ির বারান্দা বা ফেলে রাখা ঘরে চাষ করা যায়।
মাশরুম চাষে ব্যর্থতার কারণ :
(১) খড় তৈরির জন্য দরকারি ট্রেনিংয়ের অভাব।
(২) ভালো মানের স্পন বাছাইয়ের অদক্ষতা
(৩) সময় মতো স্পনের অপ্রতুলতা
(৪) পরিচর্যার অভাব
(৫) ব্যবস্থাপনার অভাব।
কোন ধরনের মাশরুম চাষ করবেন : পশ্চিমবঙ্গে খাবার মাশরুম হিসাবে সাধারণভাবে এই ৩ ধরনের মাশরুম চাষ করা হয়- ওয়েস্টার, স্কু ও বাটন মাশরুম। মাশরুম সারা বছর চাষ করা যায়। ই মাশরুম সাধারণত গরম কালে ও বর্ষাকালে চাষ করা যায়। ওয়েস্টার মাশরুম শীতকালে চাষের উপযুক্ত। মাশরুম পরিবেশ বান্ধব যা পর্যায়ক্রমে জৈবসার উৎপাদনে সাহায্য করে ও পরিবেশ দূষণ রোধে সাহায্য করে। মাশরুম তৈরির জন্য দরকার ই মাশরুমের বৈজ্ঞানিক নাম ভলভ্যারিয়েন্না ভলভাসিয়া।
তাপমাত্রা : আদর্শ তাপমাত্রা ২৫ থেকে ২৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কম ও ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি তাপমাত্রা উপযুক্ত নয়।
আর্দ্রতা : ৮৫ থেকে ৯৫ শতাংশ আর্দ্রতা মাশরুম চাষের উপযুক্ত। বেশি তাপমাত্রা থেকে মাশরুমাকে বাঁচাতে মেঝে ও জানালায় পুরোনো চটের পাটের বস্তা ঝুলিয়ে জল স্প্রে করতে হবে। শীতকালে রাতের সময় মাশরুমের ঘরে বৈদ্যুতিক আলোর ব্যবস্থা করতে হবে।
বেড সাইজ : আড়াই ফুট বাই আড়াই ফুট হবে। দরকারি খড় ১৫ কেজি বা ২০ থেকে ২৫ বাণ্ডিল প্রতিটা বেডের জন্য। দরকারি স্পন এক 'বোতল বা ৩৫০ গ্রাম-৪০০ গ্রাম প্রতিটা বেড়ের জন্য। স্পনের গড় আয়ু ২১ দিন থেকে ১ মাসের মধ্যে রাখতে হবে। দরকারি ডালের গুঁড়ো ছোলা বা মাসকলাই ডালের গুঁড়ো ৩৫০ থেকে ৪০0 গ্রাম প্রতিটা বেডের জন্য। দরকারি
পলিথিন : বেড তৈরি করার পর, ৬ ফুট বাই ৬ ফুটের পলিথিনের চাদর দিয়ে বেড ঢেকে দিতে হবে। সাদা রঙের পলিথিন হলে ভালো হয়।
খড়ের পিএইচ-র পরিমাণ খড়ে অল্প ক্ষারত্বের পরিমাণ থাকলে মাশরুমের ক্ষেত্রে ভালো হয়। তাই ১ কেজি চুন, ১০০ লিটার জলে মিশিয়ে খড়ে প্রয়োগ করতে হবে। খড়ের আর্দ্রতার পরিমাণ খড়ের আর্দ্রতার পরিমান ৬৫% হলে ভালো হয়। বেশি বা কম হলে মাইসেলিয়াম নষ্ট হয়ে যাবে। দরকারি আলো সরাসরি সূর্যের আলোর দরকার নেই। কিন্তু মাশরুমের সব বেড আলো ও অন্ধকারের মাঝামাঝি জায়গায় রাখতে হবে। গাছের নীচে মাশরুম চাষ করলে বেডের ওপর গাছের ডাল, শুকনো খড় বা পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে।
রোগ প্রতিরোধক ব্যবস্থা । খড় দিয়ে ভেজানোর পর গরম জল দিয়ে রোগ প্রতিরোধক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। অথবা জল দিয়ে খড় ভেজানোর সময় ব্যাভিস্টিন ৮ গ্রাম অথবা ফরমালিন ৫ গ্রাম ১০০ মিলি / ১০০ লিটার জলে গুলে দিতে হবে। মাশরুম বেডগুলিকে ফরমালিন দিয়ে প্রতি ২ থেকে ৩ মাস অন্তর পরিষ্কার করতে হবে। মাশরুম চাষের সময়কাল
: সব মাশরুম তুলতে ১ মাস সময় লাগবে। ফলন ১৪ থেকে ১৫ দিন পর প্রথম দফায় ৯০% থেকে ৯৫% ও আবার ৯ থেকে ১০ দিন পর দ্বিতীয় দফায় বাকি ৫% থেকে ১০% ফলন পাওয়া যায়। গড়ে প্রতি বেড থেকে ১ কেজি ফলন পাওয়া যায়।
স্ট্র মাশরুম তৈরির উপায় :
(১) ভালো মানের সাদা রঙের শক্ত খড় ১৫ থেকে ২০ আঁটি প্রতিটা বেডের জন্য নিতে হবে।
(২) খড়ের পাতা ঝেড়ে ফেলে দিয়ে সিমেন্টের তৈরি বড় গামলাতে ১০ থেকে ১২ ঘন্টা ভিজিয়ে রাখতে হবে।
(৩) ভেজানো খড়ের রোগ প্রতিরোধের জন্য ১০০ লিটার জলে ১০০ মিলি ফরমালিন বা ৮ গ্রাম বেভিস্টিন বা ১ ঘন্টা গরম জলে চুবিয়ে রাখতে হবে।
(৪) জল থেকে খড়ের আঁটি তুলে ছায়াযুক্ত জায়গায় ২ থেকে ৩ ঘন্টা পর্যন্ত শুকিয়ে নিন।
(৫) মাশরুমের স্পনের প্যাকেট খুলে চারভাগ করে নিন।
(৬) ইটের ওপর আড়াই বাই আড়াই ফুট বাঁশের কাঠামো বা ফ্রেম তৈরি করে ধাপে ধাপে খড় বিছিয়ে নিন।
(৭) প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপে চারভাগের একভাগ স্পন ও ডালের গুঁড়ো বাঁশের কাঠামোর চারদিকে মিশিয়ে দিন। লক্ষ্য রাখবেন বাশের কাঠামোর প্রতিটা কোনায় যেন ১০ সেন্টিমিটারের মতো জায়গা স্পন ও ডালের গুড়ো না মেশানো হয়। তৃতীয় ধাপে বাকি ২ তৃতীয়াংশ স্পন ও ডালের গুড়ো মিশিয়ে দিন। চতুর্থ ধাপে আকারে পাতলা হবে যাতে মাশরুম বড়ো হওয়ার জন্য পর্যাপ্ত জায়গা পায়। পর্যায়ক্রমে সব ধাপ বিপরীত মুখোমুখি করে তৈরি করতে হবে। খড়ের ধাপ গুলোকে সাদা রঙের পলিথিন দিয়ে চারদিকে শক্ত করে বেঁধে ৭ দিন পর্যন্ত রাখুন। তারপর খুলে দিন।
(৮) পলিথিন খোলার ২৪ ঘন্টা পর থেকে মাশরুম তোলা শেষ না হওয়া পর্যন্ত দিনে ২ থেকে ৩ বার জল স্প্রে করতে হবে। ওয়েস্টার মাশরুম তৈরির উপাদান : ওয়েস্টার মাশরুমের বৈজ্ঞানিক নাম গ্লিউরোটাস ওসট্রিয়েটাস।
তাপমাত্রা তাপমাত্রা দরকার ২০ থেকে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে চাষের জন্য ২০ থেকে কম ও ৩৫ থেকে বেশি তাপমাত্রা ভালো নয়।
আর্দ্রতা : ৭০% থেকে ৯৫% ভালো। তাপমাত্রা বেশি হলে মেঝেতে জল ঢেলে কিংবা জানালাতে পুরোনো পাটের বস্তা ঝুলিয়ে জল দিয়ে ভিজিয়ে দিয়ে তাপমাত্রা অনেকটা নিয়ন্ত্রনে রাখা যায়।
খড়ের পরিমাণ । প্রতিটা ইউনিটের জন্য দেড় কেজি থেকে ২ কেজি অথবা ৩ আঁটি খড় দরকার।
স্পনের পরিমাণ। প্রতিটা ইউনিটের জন্য এক বোতল অথবা ২০০ গ্রাম স্পন দরকার। স্পন ২১ দিন থেকে ১ মাসের বেশি পুরোনো না হওয়াই ভালো।
গমের পরিমাণ : প্রতিটা ইউনিটের জন্য ২০০ গ্রাম থেকে ২৫০ গ্রাম সেদ্ধ গম দরকার।
পলিথিন : প্রতিটা ইউনিট বা বেডের জন্য ৪০ সেমি বাই ৮০ সেমি পলিথিন ব্যাগের দরকার হয়।
খড়ের পিএইচ পরিমাণ : ওয়েস্টার মাশরুম বাড়ার জন্য কিছুটা ক্ষারত্ব ও অ্যাসিডিটির দরকার হয়। তাই ১০০ গ্রাম চুন, প্রতি কেজি খড়ের মধ্যে প্রযোগ করতে হবে।
খড়ের আর্দ্রতার পরিমাণ খড়ের আর্দ্রতার পরিমাণ হবে ৬৫% । আলোর দরকার : প্রথম ১৫ দিন মাশরুমের বেড (ক্ষেত্র) গুলোকে অন্ধকার ঘরে রাখলে মাইসেলিয়াম এর বৃদ্ধি ভালো হয়। এরপর বেশি আলোর দরকার হয়। পলিথিনের ব্যাগ খুলে ফেলার পর মাশরুমের বেড (ক্ষেত্র)গুলোকে যেখানে আলো ও অক্সিজেনের আধিক্য বেশি সেরকম জায়গায় ঝুলিয়ে রাখতে হবে।
রোগ প্রতিরোধক : খড়কে ভেজানোর পর রোগ-প্রতিরোধক হিসাবে গরম জল দিয়ে ধুতে হবে অথবা ভ্যাবিষ্টিন ৫৮ গ্রাম অথবা ফরমালিন ১০০ মিলি লিটার প্রতি ১০০ লিটার জলে গুলে প্রয়োগ করতে হবে।
সময় : ১ মাস ২১ দিনের মধ্যে মাশরুম চাষ করা যায়। চাষ করার উপযুক্ত সময়: অক্টোবর থেকে মার্চের মধ্যে চাষ করা যায়। কিন্তু সবচেয়ে উপযুক্ত সময় হল নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি
মাস। উৎপাদনশীলতা। স্পন বোনার ২১ দিন পর প্রথমবার মাশরুম তোলা যায়। তারপর প্রতি ৭ দিন বাদে বাদে যথাক্রমে দ্বিতীয় ও তৃতীয় বার মাশরুম তোলা যায়। গড়ে প্রতিটা বেড থেকে ২ কেজি মাশরুম পাওয়া যায়।
ওয়েস্টার মাশরুম চাষের উপায় :
প্রতিটা বেড (ক্ষেত্রের) জন্য ভালো মানের ধানের খড়ের আঁটি দেড় কেজি থেকে ২ কেজি
দরকার। উদ্ভিদবিদ টার্নফোর্ট ১৭০৭ সালে প্রথম এই মাশরুমটি কৃত্রিম উপায়ে তৈরি করতে সফল হন। এ সাদা বটন মাশরুম এমন একটা বৈচিত্র্যময় জিনিস, যাতে প্রচুর পরিমাণে মিনারেল ও ভিটামিন পাওয়া যায়। এটা চাষের জন্য খুব বেশি জায়গার দরকার হয় না। এখন, "এই মাশরুম খুচরো বাজারে প্রতি কেজি ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। বাজারে ভালো চাহিদা থাকায় সাদা বাটন মাশরুম চাষ করে খুব সহজে ভালো আয় করতে পারেন। বাটন মাশরুম তৈরিতে যা যা লাগে - তাপমাত্রা : আমাদের দেশে বাটন মাশরুম জন্মানোর উপযুক্ত সময় অক্টোবর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত। প্রথমদিকে ২২ থেকে ২৬ ডিগ্রি তাপমাত্রা এর ফলনের জন্য দরকার। এই তাপমাত্রায় এটা খুব তাড়াতাড়ি বাড়ে, এরপর ১৪ থেকে ১৮ ডিগ্রি তাপমাত্রা দরকার। ১৮ ডিগ্রির ওপরে তাপমাত্রা এই মাশরুমগুলোর জন্য ক্ষতিকারক।
সার : বাটন মাশরুম চাষের জন্য বিশেষভাবে তৈরি কম্পোস্ট সার লাগে। যাতে এই মাশরুমের ফলন ভালো হয়। কম্পোষ্ট সারকে কাঠের বাক্সে বা ৬ থেকে ৮ ইঞ্চি পুরু জারে ছড়িয়ে দিন। কম্পোষ্ট সার তৈরি করার জন্য ধানের খড় ব্যবহার করতে পারেন। ধানের গড় ভিজিয়ে রেগে ডিএপি, ইউরিয়া, পটাশ, গম, জিপসাম, ক্যালসিয়ামের সঙ্গে মিশিয়ে পচাতে হবে। এই মিশ্রণটা প্রায় ৩০ দিনের জন্য রাখতে হবে। ১৫ দিন পর এতে নিম কেক, বেকিং গুড়, এমনি গুড় মিশিয়ে নিন। একমাস পর বাভাসিনিন ও ফর্মালিন স্প্রে করার পরে এটাকে মুড়ে অন্তত ৬ ঘন্টা রাখুন। দেখবেন তাজা কম্পোস্ট সার তৈরি হয়ে যাবে।
ফলন: মাশরুমের খুম্বি (বীজ) মাটিতে রোপণের ১৫ থেকে ২০ দিন পরে, সার দিতে হবে। পরে ৪ থেকে ৫ দিনের মধ্যে এটা বোতাম বা বটমের আকারে বৃদ্ধি পায়। যুদ্ধিটির ক্যাপটি শক্ত হয়ে গেলে ও এর নীচে ঝিমি সম্পূর্ণ রূপ ধারণ করলে, এটা ব্যবহারের জন্য তৈরি হয়ে যায়। এরপর হালকাভাবে গুম্বিটি পিঠের দিক থেকে সংগ্রহ করতে হবে। তবে উন্নত ফলনের জন্য খুম্বি টাটকা ব্যবহার করাই ভালো। বিক্রির জন্য পলিথিন ব্যাগ ব্যবহার করতে হবে। এখন এই সাদা বাটন খুম্বির খুচরো দাম প্রতি কেজি ১০০ থেকে ১৫০ টাকা (বাজার দর ওঠানামা করে)। মাশরুম চাষের খরচ ও লাভ : প্রতিটা বেড পিছু খরচ হয় ১০ টাকা থেকে ১৫ টাকা। বাজার দর কেজি প্রতি ৪০ টাকা ধরে ২ কেজি। মাশরুম থেকে আয় হয় ৮০ টাকা। যদি কেউ প্রতিদিন ৫ কেজি। ওয়েস্টার মাশরুম চাষ করেন তাহলে তিনি প্রতি মাসে ১৫০ কেজি মাশরুম উৎপাদন করতে পারবেন। যা থেকে ৬,০০০ টাকা আয় হবে ও খরচ বাদ দিয়ে ৩,৭৫০ টাকা লাভ হবে। তবে এটা নির্ভর করে বাজার দর অনুযায়ী ও আপনি কিভাবে ব্যবস্থাপনা সামলাছেন তার ওপর।
মাশরুম চাষের জন্য স্বাস্থ্য সম্মত পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা অবলম্বন করতে হবে। যেমন-
(১) মাশরুম তৈরির ঘরকে পরিষ্কার করে ধুয়ে চুন দিয়ে রঙ করে নিতে হবে। মেঝেতে সাদা চুন জল দিয়ে মুছে নিতে হবে।
(২) ঘরের চারপাশ যাতে কোনো নর্দমা বা আগাছা না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
(৩) ঘরে ঢোকার পথে একটা গামলাতে জলের সঙ্গে ২% ফরমালিন মিশিয়ে রাখতে হবে তাতে জুতো বা, পা ভিজিয়ে ভেতরে ঢুকতে হবে।
(৪) মাশরুম চাষের সঙ্গে জড়িত সবাইকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হতে হবে।
(৫) অদরকারি খড় যাতে ঘরের চারপাশে পড়ে না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
(৬) খড়ের আগা ঝেড়ে ফেলে দিয়ে ৫ সেমি লম্বা করে কাটতে একবার মাশরুম চাষ করার পর আবার নতুন করে চাষ শুরু করার হবে।
কাটা খড় সিমেন্টের বড়ো গামলার মধ্যে ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখতে হবে।
ভেজা খড় ৩০ মিনিট ধরে গরম জলে সিদ্ধ করুন বা ভ্যাবিস্টিন ৮ গ্রাম বা ফরমালিন ১০০ মিলিলিটার প্রতি ১০০ লিটার জলে গুলে দিতে হবে ক্ষতিকর রোগ থেকে প্রতিকারের জন্য। তারপর ছায়া জায়গায় ১ ঘন্টা ধরে শুকোতে হবে।
মাশরুমের স্পন গুলোকে তিন ভাগে ভাগ করে রাখতে হবে।
পলিথিনের একটা দিকে বেঁধে এর মধ্যে সব খড়কে সমান ধাপে তৈরি করে ভরতে হবে। প্রথম ও শেষ ধাপগুলো আকারে অন্য ধাপ থেকে ছোটো হবে।
পলিথিনের ওপরের মুখ বন্ধ করে ১৫ থেকে ২০ টা ফুটো করতে হবে। ১৪ দিন পর্যন্ত অন্ধকার ঘরে রেখে দিতে হবে। ১৫ দিনে পলিথিন খুলে ঘরে ঝুলিয়ে দিন ও দিনে ২ থেকে ৩ বার জল স্প্রে করুন।
পলিথিন ব্যাগ খোলার ৭ দিন পর প্রথম বার মাশরুম তোলা যাবে। প্রতি সপ্তাহে অন্তত একবার করে ৪ বার মাশরুম তোলা যাবে।
গড়ে প্রতিটা বেড থেকে ২ কেজি করে মাশরুম তোলা যাবে।
সাদা বাটন মাশরুমের উপকারিতা: ভারতের অন্যান্য রাজ্যের মতো এ রাজ্যেও সাদা বাটন মাশরুম খুব জনপ্রিয়। এই মুহূর্তে সারা আগে ঘরকে পরিষ্কার করে ধুয়ে চুন দিয়ে হোয়াইট ওয়াস করার পর চাষ শুরু করবেন। যদি কোনো মাশরুম বেড রোগাক্রান্ত হয়ে পড়ে, তাহলে সেটাকে দুরে কোনো জায়গায় মাটিতে পুঁতে ফেলতে হবে বা পুড়িয়ে ফেলতে হবে। মাশরুম চাষের জন্য ব্যবহার করা ও উদ্বৃত্ত গড়কে দূরে ফেলে দিতে হবে। মাশরুমের ভাঙা অংশ কোনোভাবে যেন মাশরুমের ঘরে পড়ে না থাকে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
কীটপতঙ্গ : মাশরুমের ক্ষতি করে নানা ধরনের মাছি, শামুক ও ইঁদুর। প্রাপ্ত বয়স্ক মাছির ঘরে ঢোকা বন্ধ করতে হবে। চারপাশে নেট ব্যবহার করতে পারেন। এ ছাড়া মাছি ধরার ফাঁদ ব্যবহার করতে পারেন। শামুক ঢুকলে বাইরে ফেলে দিতে হবে ও ঘর পরিষ্কার রাখতে হবে। ইঁদুরের আক্রমণ রুখতে ইঁদুর মারার বিষ প্রয়োগ করতে হবে।
মাশরুম চাষের ট্রেনিং নামমাত্র খরচে মাশরুম চায়ের ট্রেনিং দেওয়া হয় এই ঠিকানায় :
ডিপার্টমেন্ট অফ লাইফলং লার্নিং এক্সটেনশন,
কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়, কল্যাণী, নদিয়া।
ফোন : (০৩৩) ২৫৮০-৮৩৭১।
বাজার : মাশরুম তৈরি করে যেমন বিভিন্ন খোলা বাজারে বিক্রি করতে পারেন তেমনি বিভিন্ন রেস্তোরা ও হোটেলে সরবরাহ করতে পারেন। গুণগত মানের দিকে নজর রাখতে হবে।
Read More
উপার্জনের দিশা দেখাবে মিলেট :
https://netajisubhasopenuniversityguide.blogspot.com/2024/02/%20melet.html
কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয় স্বীকৃত SIASTM-এ কৃষিবিজ্ঞান কোর্স করার পর প্রচুর চাকরির সুযোগ আছে
https://netajisubhasopenuniversityguide.blogspot.com/2024/02/%20%20%20%20%20%20.html
WBCS-এ সাফল্য পেতে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি কীভাবে নেবেন
https://netajisubhasopenuniversityguide.blogspot.com/2024/02/WBCS-%20%20.html
উলের সামগ্রী তৈরির প্রশিক্ষণ
https://spotcounsellingjobstar.blogspot.com/2024/02/%20%20%20.html
অল্প পুঁজিতে মাশরুম চাষ
https://spotcounsellingjobstar.blogspot.com/2024/02/%20.html
ইলেক্ট্রো প্লেটিংয়ের ব্যবসা
https://spotcounsellingjobstar.blogspot.com/2024/02/%20%20.html
অতিসাধারণ গৃহবধূ থেকে রাজ্য পুলিশের সাব ইন্সপেক্টর পদে কীভাবে সফল হলাম
https://chatak92.blogspot.com/2024/02/blog-post.html
সৌর বিদ্যুৎ, কুকার, বায়োগ্যাস ও বাতাস কলে বিদ্যুৎ তৈরি
https://chatak92.blogspot.com/2024/02/blog-post_22.html
স্বনির্ভরতার সন্ধান
গুঁড়ো মশলার ব্যবসা লাভের পথ দেখাচ্ছে
https://chatak92.blogspot.com/2024/02/blog-post_18.html
সবজি চাষ করে ব্যবসার সুযোগ
https://chatak92.blogspot.com/2024/02/blog-post_46.html
স্বনির্ভরতার সন্ধান
উপার্জনের দিশা দেখাচ্ছে মেশিনে তৈরি মাটির ভাঁড়, প্রদীপ
https://trendingstudentvoice.blogspot.com/2024/02/blog-post_22.html
পদ্ম পুরস্কার – 2024
https://trendingstudentvoice.blogspot.com/2024/02/2024_22.html
সয়াবিন বড়ির ব্যবসা
https://trendingstudentvoice.blogspot.com/2024/02/blog-post_30.html
পশ্চিমবঙ্গ ভবিষ্যৎ ক্রেডিট কার্ড স্কিমে ব্যবসার জন্য ঋণ দেওয়া শুরু হচ্ছে কারা কীভাবে দরখাস্ত করলে ঋণ পাবেন
https://trendingstudentvoice.blogspot.com/2024/02/blog-post_89.html
0 Comments